পশ্চিমবঙ্গের এক কোণায় গড়ে উঠেছে এক অন্যরকম পাঠশালা, যেখানে পেন-পেন্সিল নয়, মুঠো মুঠো স্বপ্নের চর্চা হয়। এই পাঠশালার নাম নেই, বিজ্ঞাপন নেই, নেই কোনও বড়সড় পরিকাঠামোও। তবু প্রতিদিন সকালবেলা একঝাঁক ছোট ছোট মুখে ভরে ওঠে ক্লাসঘর। কারণ এখানে বিনে পয়সায় পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছেন সোমেশ হালদার — এক তরুণ সমাজকর্মী।
এই পাঠশালায় মূলত ইটভাটা শ্রমিকদের সন্তানরাই পড়াশোনা করছে। যাঁরা নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় না, সংসারের বোঝা টানতে ছোট থেকেই কাজে জড়িয়ে পড়ে, তাদের জন্যই সোমেশের এই উদ্যোগ। ছেলেমেয়েদের হাতে বই, খাতা, কলম তুলে দেন তিনি নিজেই। সপ্তাহে ছয়দিন চলে এই পাঠদান।
সোমেশ জানান, “শুধু লিখতে-পড়তে শেখানোই উদ্দেশ্য নয়, এই শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলা, স্বপ্ন দেখতে শেখানো — সেটাই আমার বড় লক্ষ্য।”
এই কাজের জন্য কোনও সরকারি সাহায্য পান না সোমেশ। নিজের সঞ্চয়, আর কিছু বন্ধুবান্ধবের সহযোগিতাতেই চলছে পাঠশালার খরচ। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু পোস্টের মাধ্যমেই সম্প্রতি কিছু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মানুষ।
এক সময় যাঁরা ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তায় হারিয়ে যাচ্ছিল, আজ তারাই বলছে, “আমিও শিক্ষক হতে চাই”, “আমি পুলিশ হতে চাই”, “আমি ডাক্তার হবো”— এই কথাগুলোই যেন সোমেশের পাঠশালার সবচেয়ে বড় পুরস্কার।